Shosankandi | শ্মশানকান্দি

Shosankandi - শ্মশানকান্দি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত একটা গ্রাম। শ্মশানকান্দি গ্রামে প্রায় আট থেকে দশ হাজার মানুষের বসবাস।


এই গ্রামের নামের সাথে  শ্মশান শব্দ থাকলেও এখানে বাস্তবে কোনো শ্মশানঘাট নেই। এবং আশ্চর্য হলেও সত্য যে এই গ্রামে কোনো হিন্দু বসতিই নেই। এই গ্রামের সবাই ইসলাম ধর্মের অনুসারী। সবাই মুসলমান।


Shosankandi | শ্মশানকান্দি

দেখে নিনঃ


ধারণা করা হয় অনেক আগে এই গ্রামে হিন্দুদের বসতি ছিল, এবং একটি শ্মশান ঘাট ছিল। কিন্তু কাল পরিক্রমায় হিন্দুদের বসতি উঠে যায় ও শ্মশান ঘাটও বিলুপ্ত হয়। সেই শ্মশান থেকেই হয়তো এই গ্রামের নাম হয়েছে শ্মশানকান্দি। মাঝে মাঝে মাটি খনন করলে হিন্দুদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র পাওয়া যায়।


গ্রামের একটা পুকুর নিয়ে ভৌতিক গল্প প্রচলিত আছে। গল্পটি হলো এরকমঃ

অনেক আগে গ্রামের কোনো মেয়ের যদি বিয়ের আয়োজন করার প্রয়োজন হতো কিন্তু বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমনঃ সোনার গয়না ইত্যাদি নেই তাহলে খুব ভোরে ফজরের নামাজের পর দিঘির পাড়ে গিয়ে যদি কেউ তার সমস্যার কথা বলতো, তাহলে দিঘির মাঝখানে থেকে সোনার গয়না ভর্তি ডালা ভেসে উঠতো।


এই গয়না নিয়ে গিয়ে মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করা হতো। তারপর বিয়ে হয়ে গেলে সন্ধ্যাবেলায় আবার গয়নাগুলো ফিরে দিয়ে আসতে হতো। এভাবে গ্রামের লোকজন যাদের আর্থিক সমস্যা তারা ওই পুকুর থেকে গয়না নিয়ে এসে মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করতো। 


কিন্তু এই সুবিধা চলে যায় এক লোভী কৃষকের কারণে৷ তার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে সে পুকুর থেকে গয়না গুলো নিয়ে আসে। সে ভাবে আমি গয়নাগুলো রেখে দেই, তাহলে এগুলো বিক্রি করে আমি ধনী হয়ে যাবো। তাই তার ভাবনা মত সে গয়নাগুলো আর ফেরত দিয়ে আসে না, তার নিজের কাছে রেখে দেয়।


কিন্তু তার এই কাজ তার মৃত্যু ডেকে আনে। ওই গয়নাগুলো তো সে পায়ই না, একদিন হঠাৎ করে হারিয়ে যায়। বরং এই ঘটনার কয়েকদিন পর তার মৃত্যু হয়। তখন থেকে ওই পুকুর থেকে আর গয়না ওঠে না।


শ্মশানকান্দি গ্রামটি শাজাহানপুর উপজেলার একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এই গ্রামের উত্তর ও পশ্চিম দিকে বগুড়া সদর উপজেলা অবস্থিত এবং পূর্বদিকে গাবতলী উপজেলা অবস্থিত। Shosankandi গ্রাম অন্যান্য গ্রামের তুলনায় অনেক উন্নত কারণ এই গ্রাম থেকে বগুড়া শহরের দুরত্ব মাত্র ৭ কিমি. গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক ভালো। গ্রামের মাঝ দিয়ে একটি পাকা রাস্তা চলে গিয়েছে।


এই গ্রামের সবাই ইসলাম ধর্মের অনুসারী। মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য এখানে ৫ টি মসজিদ ও ২ টি ঈদগাহ মাঠ আছে। Shosankandi গ্রামে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ রয়েছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই কৃষিজীবী। তারা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী এবং চাকরিজীবীও রয়েছে।


এই গ্রাম এ একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি মাদ্রাসা এবং একটি বাজার রয়েছে। এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। পাশাপাশি গ্রামে বসবাসকারী মানুষগুলোও সহজ সরল এবং শান্তি প্রিয়।  Shosankandi গ্রামের প্রায় সবাই শিক্ষিত। এখানে শিক্ষার হার প্রায় ৮০%।


Shosankandi গ্রামের কিছু ছবিঃ

1 / 3
Shosankandi | শ্মশানকান্দি
ছবিঃ শ্মশানকান্দি গ্রামের বটগাছ
2 / 3
Shosankandi | শ্মশানকান্দি
ছবিঃ শ্মশানকান্দি গ্রামের পুকুর
3 / 3
Shosankandi | শ্মশানকান্দি
ছবিঃ শ্মশানকান্দি গ্রামের ফসলি জমি

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন